শেয়ারের দামের বিভিন্ন প্যাটার্ন
ডিস্ট্রিবিউশন প্যাটার্ন (আপট্রেন্ড-এর শেষে)
ডিস্ট্রিবিউশন প্যাটার্ন দেখা যায় কোন শেয়ারের আপট্রেন্ড এর শেষে বা উর্দ্ধগতির শেষে। মানে শেয়ারের আপট্রেন্ড-এর শেষে যখন একটা ট্রেন্ড পরিবর্তন হবে, উর্দ্ধগতি থেকে নিম্নগতিতে বা আপট্রেন্ড থেকে ডাউনট্রেন্ড-এ, এইরকম সময়ে ডিসট্রিবিউশন প্যাটার্ন লক্ষ্য করা যায় আপট্রেন্ড ও ডাউনট্রেন্ড এর মধ্যবর্তী জায়গায়। এই সময় কোন শেয়ার হাতবদল হয় শেয়ার বাজারে অভিজ্ঞ ইনভেস্টর থেকে অনভিজ্ঞ ট্রেডার বা ইনভেস্টরদের হাতে, যারা শেয়ার বাজারে নতুন। কোন আপট্রেন্ডের শেষে অভিজ্ঞ শেয়ার মার্কেটের ট্রেডার/ ইনভেস্টর যারা তারা এই সময় শেয়ার গুলোকে সেল করতে থাকে এবং সেগুলো অনভিজ্ঞ নতুন ইনভেস্টররা, সেই শেয়ার গুলিকে BUY করতে থাকে মানে কিনতে থাকে, এই দৃষ্টিভঙ্গি বা আইডিয়া থেকে যে এই শেয়ারটির দাম আরো উঠবে মানে বাড়বে।
মানে আপট্রেন্ড দুম করে ডাউনট্রেন্ড হয়ে যায় না, এই ট্রেন্ডের পরিবর্তন হতে বেশ কিছুটা সময় লাগে, এই মধ্যবর্তী সময়ে এই ডিস্ট্রিবিউশন প্যাটার্ন লক্ষ্য করা যায় ।
Accumulation প্যাটার্ন (ডাউনট্রেন্ডের শেষে)
আর Accumulation প্যাটার্ন হল এর ঠিক উল্টো। এই প্যাটার্নের আগে শেয়ার অত্যন্ত ডাউনট্রেন্ডে থাকে, মানে নিম্নগতিতে থাকে, অর্থাৎ সেই শেয়ারটির দাম পড়তে থাকে বিগত বেশ কিছুদিন (কখনো কয়েক মাস) যাবৎ। এখানে কোন নির্দিষ্ট শেয়ার এর পরিবর্তে সমগ্র শেয়ার বাজারও ডাউনট্রেন্ডে থাকতে পারে। মার্কেট বলতে বোঝানো হচ্ছে সেন্সেক্স, নিফটি ইন্ডেক্স ইত্যাদি শেয়ার সূচক।
আমরা বোঝার সুবিধার্তে আপাতত কোনো একটা শেয়ার ডাউনট্রেন্ডে আছে ধরে নিই। শেয়ার যখন ডাউনট্রেন্ডে থাকে তখন দাম ক্রমাগত পড়তে থাকে, পড়তে পড়তে কিন্তু একটা সময় হয় যখন আর পতন নতুন করে হবে না, তার পতন থেমে গেছে। কিন্তু এই সময় যারা অনভিজ্ঞ নতুন ইনভেস্টর, যাদের শেয়ার বাজার সম্পর্কে অভিজ্ঞতা কম, তারা ভাবে যে আরও পড়বে শেয়ারের দাম (বা শেয়ার সূচক NIFTY, SENSEX) । এসময় বাজার সম্পর্কে অভিজ্ঞ, যারা শেয়ারের খুব ভালো খোঁজখবর রাখে, তারা এই শেয়ারগুলিকে অল্প দামে কিনতে থাকে।
অর্থাৎ অনভিজ্ঞ ইনভেস্টরদের হাত থেকে অভিজ্ঞ, তথ্যসমৃদ্ধ well-informed ইনভেস্টর দের হাতে শেয়ারের হাতবদল হয়। অভিজ্ঞরা শেয়ার টিকে কিনতে থাকে বা বলা ভালো সঞ্চয় (acumulate) করতে থাকে, অনভিজ্ঞ ইনভেস্টররা বেচতে থাকে এসময়।
কনসলিডেশন প্যাটার্ন (Consolidation, Uptrend continuation )
আর কনসলিডেশন প্যাটার্ন হলো আরেক ধরনের প্যাটার্ন যেটা কিন্তু Continuation প্যাটার্ন। একটু ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলি, ধরুন কোন শেয়ারের দাম বাড়ছে। ক্রমাগত বাড়তে বাড়তে একটা সময় কিন্তু শেয়ারের দাম বাড়াটা থেমে যায় এবং সেই সময়টা Sidewise মুভমেন্ট দেখা যায়, শেয়ারের দামটা একটা রেঞ্জের মধ্যে ওঠানামা করে। এই সময় দেখা যায় কনসলিডেশন প্যাটার্ন। মানে বেশ কিছুদিন শেয়ারের দামটা একটা উর্দ্ধসীমা (ম্যাক্সিমাম) ও নিম্নসীমার (মিনিমাম) মধ্যে ঘোরাফেরা করে। শেয়ারের দাম কিন্তু আর পড়ে যায় না, বা বাড়ে না সেইভাবে। একে বলা হয় শেয়ারের দাম কনসোলিডেট করছে।
এই প্যাটার্ন যখন শেষ হয়, এই সময় কিন্তু সেই রেঞ্জ ভেঙে শেয়ারের দাম প্যাটার্ন শেষ হয়ে যাওয়ার পরে আবার উঠতে থাকে নতুন নতুন উচ্চতায় । তাকে বলে প্যাটার্ন ব্রেক আউট।
কনসলিডেশন প্যাটার্ন কখন দেখা যায় তাহলে ?
যখন শেয়ারের দাম বাড়তে বাড়তে, শেয়ারের ঊর্ধ্বগতি সাময়িকভাবে স্থগিত হয়ে যায় এবং সেই সময় শেয়ারের দাম আবার Accumulate বা সঞ্চিত হতে থাকে আরও ঊর্ধ্বগতি নেবার জন্য। এসময় কনসলিডেশন প্যাটার্ন দেখা যায়।